নিজস্ব প্রতিবেদক :: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, ‘সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্বাচনী ট্রেনে চড়ে বসেছে নতুন বাংলাদেশ।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে দিয়েছেন। তবে একটি কুচক্রী মহল নির্বাচন বানচালের হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা তাদেরকে হুশিয়ার করে দিচ্ছি, নির্বাচন বানচাল করার কোন ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্ত আমরা মানবো না। এমনকি যারা এসব চক্রান্তে লিপ্ত থাকবেন তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না। আমরা কাঙ্খিত পরিবেশ অর্থাৎ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের পাশাপাশি নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত চাই।’
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকাল ৩টায় বিয়ানীবাজার পৌরশহরের দক্ষিণ বাজারে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রার্থী ঘোষণা ও কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) নির্বাচনী আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামকে জনসম্মুখে পরিচয় করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, আল্লামা শায়খ জিয়া উদ্দিনের এলাকা হওয়ার পাশাপাশি এই আসন জাতীয় নির্বাচনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বলে আমরা নাকি বয়োবৃদ্ধ নেতৃত্বকেই নির্বাচনের প্রার্থীতার জন্য বেছে নেই। এবার সবার সেই ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে তরুণদের এগিয়ে রাখতে সারাদেশে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আপনাদের জন্য তরুণ অনেক প্রার্থীকে এবার ভোট যুদ্ধে নামিয়েছে। ইনশাআল্লাহ এবার বিজয় নিশ্চিত করেই আমরা ঘরে ফিরবো।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশি-বিদেশি নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে। ২৪-এর অভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছে তাদের সাথে বেইমানী করা যাবেনা। ৪৭ থেকে ৭১ এর শহীদ, ব্রিটিশ বিরোধী শহীদদের সাথেও বেইমানী করা যাবেনা।
বাংলাদেশ নতুনভাবে পথ চলা শুরু করেছে। এই নবযাত্রায় আমরা কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলবো না। বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। তাই এ দেশে ইসলামী বোধ-বিশ্বাসবিরোধী যাবতীয় তৎপরতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে যে কোনো মূল্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পালাই না, পালাবো না বলে একদল ইতোমধ্যে পালিয়ে গেছে। তবে তারা ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে জাতিকে ভুল ব্যাখা দিয়েছে। বর্তমানে একটি রাজনৈতিক দল ইসলামের নামে কেবল ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা ইসলামের অন্য বিধি-বিধান মানতে চায়না। দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন স্থাপন হওয়ার পরও একটি ইসলামী দল কোন প্রতিবাদ করেনি। এজন্য আমরা তাদের সাথে নেই। আমরা সঠিক ইসলামের পথ দেখিয়ে তরুণদের দলে টানতে চাই।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন কেবলই বস্তুকে কেন্দ্র করে হয়নি। এই আন্দোলনের মূল উপাদান ছিল আদর্শ। ইসলামী দর্শন ও চেতনাকে গলাচেপে ধরেছিল পতিত স্বৈরাচার। তাই পরাজিত শক্তি ও তার দোসররা যেন কোনোভাবেই পুনর্বাসিত হতে না পারে সেজন্য দেশের ইসলামপ্রিয় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিগত দিনে যারা উন্নয়নের নামে লুটপাট চালিয়েছে, হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে-তারা জাতিকে কেবল ধোঁকা দিয়েছে।
দুই পর্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্ঠা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা দক্ষিণ জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মুফতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুশতাক আহমদ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আব্দুল মতিন নাদিয়া ও মাওলানা আতিকুর রহমান।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা জমিয়তের সভাপতি শায়খ আব্দুল মতিন নাদিয়া’র সভাপতিত্বে এবং বিয়ানীবাজার উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল হক কাসিমি ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আহমদের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জমিয়তের প্রধান উপদেষ্টা শায়খ জিয়া উদ্দীন। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সিলেট-৬ (বিয়নীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে জমিয়তের মনোনীত প্রার্থী সমাজসেবক হাফিজ মাওলানা ফখরুল ইসলাম।
বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ বদরুল ইসলাম, সিলেট জেলা দক্ষিণের সভাপতি মুফতী মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, জেলা জমিয়তের সহ সভাপতি আলহাজ্ব শামসুদ্দিন বানিগামী, মাওলানা আসরারুল হক, জেলা জমিয়তের সহ সাধারণ সম্পাদক ও বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুফতী শিব্বির আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা জমিয়তের সহ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফয়সল আহমদ, জেলা যুব জমিয়তের সভাপতি ও বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিয়ানীবাজার উপজেলা যুব জমিয়তের সভাপতি তোফায়েল আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্র জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি জাহিদ আহমদ প্রমুখ।